Bangla Nexa

প্রাইজ বন্ড কি। প্রাইজ বন্ড কেনার নিয়ম। প্রাইজ বন্ড ড্র।

আসসালামু আলাইকুম। আমাদের আজকের টপিক হলো প্রাইজ বন্ড কি। প্রাইজ বন্ড কেনার নিয়ম। প্রাইজ বন্ড ড্র। যারা সুদ মুক্ত ডিপোজিট করতে চান তাদের জন্য এটা অনেক ভালো একটা সুযোগ। আজকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আপনি যদি প্রাইজ বন্ড নিয়ে জানতে চান তাহলে অনুরোধ করব পুরোটা পড়ার জন্য।

প্রাইজ বন্ড

প্রাইজ বন্ড কি।

প্রাইজ বন্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে প্রধান করা হয়। প্রাইজবন্ড অনেকটা লটারির মতো। এখানে আপনি অনেক টাকা জিততে পারেন অথবা এক টাকা ও জিততে না পারেন। তবে লটারি ও প্রইজবন্ড এর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে। মনে করেন আপনি ১০০ টাকা দিয়ে একটি লটারির টিকেট কিনলেন। আপনি যদি লটারি জিতেন তাহলে আপনি অনেক টাকা পাবেন। তবে আপনি যদি লটারি হেরে যান আপনার ১০০ টাকা লস হয়ে যাবে। বিপরীতে ১০০ টাকা দিয়ে আপনি একটি প্রাইজবন্ড কিনলে আপনি সর্বোচ্চ ৬ লক্ষ টাকা পযন্ত জিততে পারেন। তবে আপনি যদি কোন পুরস্কার নাও পান তাহলে আপনার ১০০ টাকা আপনি ফিরত পাবেন। এক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রাইজ বন্ড হলো ঝুঁকিমুক্ত আর লটারি হলো ঝুঁকিযুক্ত।

সুদ মুক্ত জাতীয় প্রাইজ বন্ড।

আমরা জানি যে লটারি হারাম। তবে প্রথম পার্ট এই আমরা আলোচনা করেছি যে প্রাইজ বন্ড কোন লটারি না। আপনি এখানে টাকা হারাচ্ছেন না। যেকোন মুহূর্তে আপনি প্রাইজ বন্ড কে আবার টাকায় কনভার্ট করতে পারবেন। তবে প্রাইজ বন্ড কিনার মাধ্যেমে আপনি সরকার থেকে এটা একটা বন্ড পাচ্ছেন যাতে নাম্বার থাকবে। আপনার নাম্বার যদি ড্র তে উঠে আপনি সরকার থেকে পুরস্কার পাবেন। পুরস্কার আপনি পাবেন কিনা এটার কোন নিশ্চয়তা নেই। যেহতু আপনি প্রাইজ বন্ড এ টাকা হারাচ্ছেন না তাই এটা কে সুদ মুক্ত বিনয়োগ বলা হয়। তবে এর বাহির এও অনেক ইসলামিক স্কলার এটা কে না জাযেজ বলে উল্লেখ করেছে। আপনি আপনার মতো করে আরো ভালো করে জেনে নিতে পারেন।

প্রাইজ বন্ড কেনার নিয়ম।

বাংলাদেশ ব্যাংক এর যেকোন শাখা থেকে আপনি প্রইজ বন্ড কিনতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যেকোন যেকোন বানিজ্যিক ব্যাংক থেকে কিনতে কিনতে পারবেন। তবে সাধারনত ইসলামিক ব্যাংক গুলোতে এগুলো পাওয়া যায় না। আপনি যেকোন সঞ্চয় বুরো থেকে ও কিনতে পারবেন। প্রাইজ কিনার জন্য আপনার কোন কাগজ পত্র এর প্রয়োজন হবে না। এমনকি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ও কোন প্রয়োজন হবে না। সাধারনত প্রাইজ বন্ড যার কাছে থাকবে সেই এর মালিক বলে গন্য করা হবে।

প্রাইজ বন্ড সাধারনত দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। তাই যে প্রইজ বন্ড গুলো বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া অন্য ব্যাংক এ থাকবে। যেমন কোন প্রইজ বন্ড যদি সোনালী ব্যাংক এ থাকে এবং তা যদি ড্র তে বিজয়ী হয়। তাহলে সেই প্রইজ বন্ড এর টাকা উক্ত ব্যাংক পাবে। কারন তারা এই প্রাইজ বন্ড এর জন্য ইনভেষ্ট করে।

প্রাইজ বন্ড ড্র।

প্রাইজবন্ডের ”ড্র” সাধারনত বছরে চার বার অনুষ্ঠিত হয়। আপনি একবার কোন প্রইজ বন্ড কিনলে যতদিন তা বিক্রি না করবেন ততদিন তা ড্র এর জন্য গ্রহনযোগ্য হবে। প্রত্যেক তিন মাস পরপর প্রইজবন্ড এর ড্র অনুষ্ঠিত হয়। তারিখ গুলো হলো..

৩১ জানুয়ারি
৩০ এপ্রিল
৩১ জুলাই
৩১ অক্টোবর

আপনি যে প্রাইজ বন্ড কিনবেন তা যেই তারিখ এ মার্কেট এ ছাড়া হয়েছে তার থেকে ২ মাস পর এই প্রাইজবন্ড ড্র এর আওতায় আসবে। তারপর থেকে এই প্রইজবন্ড সবসময় ড্র এর জন্য বিবেচনা করা হবে।

প্রাইজবন্ড কাদের কেনা উচিৎ।

প্রাইজ বন্ড সাধারনত চালু করা হয়েছে নিম্ন ভিওদের সঞ্চয় এর কথা চিন্তা করে। তাই যাদের কাছে সঞ্চয় করার জন্য সামান্য টাকা আছে তারা চাইলে প্রাইজবন্ড কিনতে পারেন। আপনি যদি এই টাকা ব্যাংক এ রাখেন আপনি তেমন কোন প্রফিট পাবেন না। তাই আপনি এ টাকা ব্যাংক এ না রেখে প্রাইজ বন্ড কিনতে পারেন। এতে আপনার টাকা রিক্স মুক্ত থাকবে এবং কোন ড্র তে আপনি জিতে গেলে অনেক টাকা লাভবান হবেন।

বিপরীতে যাদের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা আছে তাদের জন্য প্রইজ বন্ড কিনা খুব একটা লাভজনক হবে না। আপনার কাছে যদি লক্ষ লক্ষ টাকা থাকে সেগুলো আপনি ব্যাংক এ রাখলে হয়তো অনেক টাকাই লাভ পাবেন। প্রাইজ বন্ড কিনলে আপনি টাকা পেতে ও পারেন আবার নাও পেতে পারেন। তাই বলা যায় প্রাইজ বন্ড তাদের জন্য ভালো হবে যারা কম টাকা সঞ্চয় করতে চায়। যাদের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা আছে তারা নিজেদের পছন্দ মতো টাকা যেকোন ব্যাংক এ রাখতে পারেন।

প্রাইজবন্ড এর টাকা কিভাবে তুলতে হয়।

এখানে দুই ধরনের উওলোন হতে পারে। প্রথমত আপনি যদি বিজয়ী না হন এবং আপনার প্রইজবন্ড এর টাকা তুলে ফেলতে চান। তাহলে আপনি আপনার নিকটবর্তী বানিজ্যিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক এ , সঞ্চয় অফিস এ প্রাইজ বন্ড গুলো জমা দিলে আপনার টাকা আপনাকে দিয়ে দিবে। আরেকটা ধরন হচ্ছে যারা বিজয়ী হবে তারা কিভাবে টাকা তুলবে। আপনাদের বাংলাদেশ ব্যাংক এর যেকোন শাখায় পুরস্কার এর জন্য আবেদন করতে হবে। যাদের বাসা কাছাকাছি বাংলাদেশ ব্যাংক এর কোন শাখা নাই এটা তাদের জন্য একটু কষ্টকর হতে পারে। তবে পুরস্কার জিতার আনন্দর কাছে হয়তো এই কষ্ট খুব একটা বেশি মনে হবে না।

প্রাইজ বন্ড এর বিজয়ী এর রেজাল্ট কিভাবে চ্যাক করব।

প্রাইজ বন্ড এর ড্র হয়ে গেলে অনেক পত্রিকা সহ অনলাইন পত্রিকায় এর রেজাল্ট দেওয়া হয়। আপনি চাইলে সেখানে আপনার রেজাল্ট দেখে নিতে পারেন। তবে এটা ও অনেক এর জন্য অনেক কষ্টকর হতে পারে। অনেক গুলো প্রাইজ বন্ড এক এক করে চ্যাক করা অনেক সময় এর ব্যাপার। আপনার যাতে কষ্ট না হয় এর ও অনেক উপায় আছে। অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে আপনারা প্রাইজ বন্ড এড করে রাখতে পারবেন। prachurja.com তাদের মধ্যে অন্যতম। আপনি এখানে সাবসক্রিপশন কিনে একবার প্রাইজবন্ড এড করে নিয়ে যতবার ড্র হবে আপনি বিজয়ী হলে তারা আপনাক ম্যাসেজ এর মাধ্যেমে জানিয়ে দিবে।

প্রাইজ বন্ড

আরো পড়ুন: সেলফিন একাউন্ট খোলার নিয়ম

প্রাইজবন্ড এর পুরস্কার লিষ্ট।

প্রতিটি সিরিজ এর জন্য পুরস্কার লিস্ট রয়েছে। এই পযন্ত ২০২৪ পযন্ত মোট ৭৮ টি সিরিজ রয়েছে। প্রথম পুরস্কার একটি ৬ লাখ টাকা প্রতি সিরিজ এ একজন। দ্বিতীয় পুরস্কার ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রতি সিরিজ এ এক জন। তৃতীয় পুরস্কার ১ লাখ টাকা প্রতি সিরিজ এ দুই জন। চতুর্থ পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা প্রতি সিরিজ এ দুইজন। পঞ্চম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা প্রতি সিরিজ এ ৪০ জন। এভাবে মোট ৭৮ সিরিজ এর জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে। পরবর্তী তে সিরিজ এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পুরস্কার এর সংখ্যা ও বৃদ্ধি পাবে।

প্রাইজ বন্ড

আশা করি প্রইজ বন্ড সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পারছেন। যদি এর বাহির এ কোন প্রশ্ন থাকে সেটা আপনারা কমেন্ট এ আমাদের জানাবেন। যদি কোন তথ্য আপনার কাছে ভুল মনে হয় সেটা ও আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

কিওয়ার্ড: সুদ মুক্ত জাতীয় প্রাইজ বন্ড, প্রাইজবন্ড কেনার নিয়ম, প্রাইজ বন্ড, প্রাইজবন্ড ড্র ২০২৪, ১০ টাকার লটারি, সরকারি লটারি টিকিট, ১০০ টাকার লটারি, প্রাইজ বন্ড ড্র,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top